প্রকাশিত: ০২/০৫/২০১৮ ৬:০৬ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:২৩ এএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

রোহিঙ্গাদের নিয়ে ব্যাপারে ক্রমাগত একের পর এক টালবাহানার পর মিয়ানমারের নেত্রী অং সাং সুচি মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘নিরাপদ প্রত্যাবাসনের’ জন্য জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করার এখন উপযুক্ত সময়।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সফরকারী প্রতিনিধিদলের সাথে সেদিন সন্ধ্যায় এক বৈঠকের পর মিস সুচির অফিস থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে – ‘শরণার্থীরা’ যাতে ‘নির্ভয়ে’ রাখাইনে ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করা তার সরকারের পক্ষে সুবিধে হবে যদি বিদেশীদের এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা যায়।

মিস সুচি বলেন, এ ব্যাপারে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) এবং জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার(ইউএনএইচসিআর) সাথে একটি চুক্তি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিনিধিদলের সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে করে মিস সুচি তার বিবৃতিতে এমন কথাও বলেছেন, “এটি একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা…গণতান্ত্রিক মিয়ানমারে সহিংসতার কোনো স্থান নেই…যারা ঘরবাড়ি হারিয়ে পালিয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনতে আমাদের জোর চেষ্টা করতে হবে, সহিংসতার মূল কারণগুলো দুর করতে হবে।”

মিয়ানমার সরকার এবং অং সান সুচি নিজেও এর আগে জাতিসংঘকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার ঘোর বিরোধী ছিলেন।

ফলে এই বিবৃতিকে মিয়ানমারে বিবিসির সংবাদদাতা নিক বিক অং সান সুচির অবস্থানে গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিবর্তন হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

 

সুর নরমের সম্ভাব্য কারণ কি?

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত বিবিসিকে বলেছেন – সফরকারী কূটনীতিকরা মিস সুচি এবং মিয়ানমারের সেনা প্রধানকে ‘স্পষ্ট করে বলেছেন’ রাখাইনে নির্যাতন, হত্যা এবং ধর্ষণের ঘটনাগুলোর ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তদন্ত না করণে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিসি) বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এর আগে জাতিসংঘের একাধিক কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর ‘কপি-বুক’ জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালিয়েছে।

গত সপ্তাহে বার্তা সংস্থা রয়টরসের একটি অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ধর্ষণ এবং হত্যার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করা হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতে মিয়ানমারের সেনা-কর্মকর্তাদের আইসিসিতে বিচার হলে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করা যায়।

বিবিসির সংবাদদাতা মনে করছেন, এই হুমকি মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে।

জাতিসংঘের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সাথে কথাবার্তা চলছে এবং তার বিশ্বাস অদূর ভবিষ্যতে একটি চুক্তি হতে পারে। তবে তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতেই কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে।

পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বিশ্বাস করেন – সেনাবাহিনী এখনও মিয়ানমারে ক্ষমতার উৎস এবং সেদেশের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নেন।

এছাড়া, ফেরার শর্ত হিসাবে নাগরিকত্বের যে দাবি রোহিঙ্গারা করছেন সে ব্যাপারে প্রতিশ্রুতির কোনো ইঙ্গিত মিয়ানমার এখনো দেয়নি।

পাঠকের মতামত

বিদ্রোহীদের কাছে কৌশলগত তথ্য ফাঁস করছে মিয়ানমার সেনারা

মিয়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধের জেরে দেশটির ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী সেনাবাহিনীর মধ্যে ফাটল ধরেছে। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অনেকে বিদ্রোহীদের ...

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে শান্তি স্থায়ী হবে না

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে স্থায়ী শান্তি ও ...

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন

জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের নিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক কটাক্ষ ও ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্ট বানিয়ে অপপ্রচার ...